বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ২০২০-২০২১ প্রস্তুতি আমাদের সবারই স্বপ্ন থাকে দেশের নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পড়াশোনা করার।
অনেকেই ছোঁটে কোচিং, প্রাইভেট এর পিছনে কিন্তু তাদের সবাই কি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পড়াশোনা করার সুযোগ পায় ?
না। সবাই পায় না। কারন তারা সঠিক কোনো গাইড লাইন অনুসরন করতে পারে না। ভর্তি পরীক্ষার জন্য কোচিং বা প্রাইভেটে না ছুঁটে, সময় নষ্ট না করে ঘরে বসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব।
প্রথমেই বলব নিজের ফেকাস ঠিক রাখতে। কারন ফোকাস ঠিক না রাখলে অনেক পড়াশোনা করেও চান্স পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তোমার লক্ষ্য যদি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাহলে মন স্থির করো এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাও।
কোচিং ছাড়াই ভার্সিটি ভর্তি প্রস্তুতি
আজ আমি তোমাদের সাথে এমন কিছু টেকনিক শেয়ার করব যা তোমাদের ঘরে বসে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে অনেক সাহায্য করবে বলে আশা করছি।
রুটিন তৈরি :
কার্যকরী অনেকগুলো উপায়ের একটি হলো রুটিন তৈরি করে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া। তুমি যদি বুঝতে না পার কোথায় থেকে শুরু করবে রুটিন তৈরি করা, কীভাবে বিষয় গুলো সাজাবে ? তাহলে বলব তোমার বন্ধুদের থেকে বিভিন্ন কোচিং বা প্রাইভেট এ যে রুটিন তাদের দিয়েছে তা সংগ্রহ করতে।
রুটিন গুলো থেকে ধারণা নিয়ে তোমার সুবিধা অনুযায়ী প্রত্যেক দিনের রুটিন গুলো তৈরি করে ফেলো। তারপর একে একে বিষয় গুলো তোমার সূবিধা অনুযায়ী সাজাও এবং সেই রুটিনটা মানার চেষ্টা কর।
পাঠ্যবই অনুসরণ :
শুরুতেই বলে রাখি ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার জন্য পাঠ্য বইয়ের বিকল্প নেই। তোমরা যেই লেখকের বই – ই পড় না কোন সেই বইটাই খুব ভালোভাবে শেষ করো। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কি -ওয়ার্ড গুলো মাথায় রাখো। কিছু বইয়ের মধ্যে অধ্যায়ের ভেতরে বোল্ড অক্ষরের লেখা থাকে সেগুলো ভালোভাবে আয়ত্ব করো।
পাঠ্য বই ভালোভাবে শেষ করার পর “CHEMISTRY” কৌশল টি অবলম্বন করতে পারো।
এই কৌশলটা সবাই প্রয়োগ করতে পারবে এবং সবার কাজে লাগবে। তোমরা যেহেতু কৌশলটা জানতো চাচ্ছো তাহলে আমি ধরে নিচ্ছি তোমারা পাঠ্য বই খুব ভালোভাবে শেষ করেছো। চলো দেখি কৌশলটা কি ?
অনেকেই হয়তো ভাবা শুরু করে দিয়েছো যে লেখাটা বা কৌশলটা শুধু বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রীরাই প্রয়োগ করতে পারবে। অন্যকেউ এটা প্রয়োগ করলে কাজে লাগবে না। আসলেই কি তাই? একদমই না, এটা রসায়ন বই নয়, কৌশল।
C – Concept:
তোমরা কমবেশি অনেকেই চিন্তা করেছো যে C তে কি হয়? কনসেপ্ট বা ধারনা অনেক গুরুত্বপূর্ন। তুমি এখন কোন বিষয়টা পড়ছো বা পড়তে চাচ্ছো তা নিয়ে তোমার অনেক বেশি ধারনা থাকতে হবে। ঐ বিষয় নিয়ে তোমাকে কি কি জানতে হবে,কী কী পড়তে হবে তা নিয়ে তোমার বিষদ ধারনা থাকতে হবে। যেটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।
H – Huge practice:
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেতে হলে অনেক অনুশীলন প্রয়োজন। সাধারনত আমরা কিছু শিখলে বা পড়লে সেটা আমাদের মস্কিষ্কে ৩ দিন বা ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী থাকে। এর পর আমরা সব ভুলে যেতে শুরু করি। তাই পড়াগুলো মনে রাখার জন্য অনেক অনুশীলন করতে হবে। অন্যথায় চান্স পাওয়া অসম্ভব হয়ে পরবে। তুমি যেটাই পড়ো না কেনো সেটাই বার বার অনুশীলন করতে হবে।
E – Ex. question analysis:
বিগত বছরের প্রশ্ন আয়ত্ব করা। এটি খুব গুরুত্বপূর্ন অংশ। প্রশ্ন ব্যাংকে থাকা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংবা একটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই বিগত ৮/৯ বছরের প্রশ্ন গুলো থেকে প্রায় ৫০-৬০% কমন পাওয়া যায়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যিই কমন পাওয়া যায়। বিগত বছরের প্রশ্নের প্যাটার্ন গুলো অনুসরন করেই ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়।
M – Marking of the topic:
তুমি যেই বিষয়টা বা যেই অধ্যায়টা পড়বে সেটা দাগিয়ে পড়ো। তোমার কাছে যে লাইন গুলো গুরুত্বপূর্ন বলে মনে হবে সেগুলোর নিচে দাগ দিয়ে রাখ। এই কাজটা করার কারন হলো ভর্তি পরীক্ষার আগে খুব বেশি সময় পাওয়া যায় না। কম সময়ে এত পড়া গোছানো সম্ভব হয় না।
এগুলো রিভিশন দেওয়ার সময় পাওয়া যায় না। একেবারে ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন রিভিশন দেওয়ার সুযোগ পাবে। আর তখন হিমশিম খেতে হবে না। তাই গুরুত্বপূর্ন লাইন গুলোর নিচে দাগ দিয়ে রাখলে রিভিশন দিতে সহজ হয়।
I – Important question analysis:
বিগত বছরের প্রশ্নগুলোর মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন থাকে যেগুলো বুঝে সমাধান করা খুব গুরুত্বপূর্ন। যেই প্রশ্নগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথবিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে বার বার এসেছিল সেগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ন। ঐ প্রশ্ন গুলো সমাধান করলে ভর্তি পরীক্ষায় অনেক প্রশ্ন কমন পাওয়া সম্ভব।
S – Shortcut technique Shortcut technique:
তুমি কেনো অবলম্বন করবে? কারন হলো প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় অনেক কম কিন্তু প্রশ্ন অনেক বেশি। যদি তুমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা চিন্তা করো তাহলে প্রতিটা প্রশ্নের সমাধান করার জন্য তুমি ৪৫ সেকেন্ড সময় পাবে। যেটা একটা প্রশ্ন সমাধান করার জন্য যথেষ্ট নয়। তাই তোমাকে Shortcut technique ব্যবহার করতে হবে যেনো সময় শেয় হওয়ার আগেও প্রশ্নের সমাধান করতে পার।
T – Transformation of question:
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় একটা প্রশ্ন বার বার ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে,সংখ্যা বা ভাষার পরিবর্তন করে আসে। যেগুলো সব শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারে না। এ গুলো বুঝতে পারার একটি উপায় আছে আর সেটি হলো অনেক বেশি অনুশীন করা।বেশি অনুশীলন করলে কঠিন প্রশ্নগুলোও অতি সহজেই বোঝা সম্ভব। তাই প্রশ্ন বোঝার জন্য অনুশীলন করতে হবে।
R – Revision Revision:
পড়ার খুব গুরুত্বপূর্ন একটি অংশ। তুমি যত বেশি রিভিশন দেবে তোমার পড়া তত বেশি মনে থাকবে। মনে রাখবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার পড়া খুবই কম। কিন্তু পড়া মনে রাখা সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। আর মনে রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো বার বার রিভিশন দেয়া। বার বার রিভিশন দিলে সবচেয়ে কঠিন পড়াটাও আয়ত্বে আনা সম্ভব।
উপরে ঘরে বসে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ২০২০-২০২১ প্রস্তুতি নেওয়ার কার্যকরী উপায় গুলো বললাম। কিন্তু ৯টা শব্দের মধ্যে আমি ৮ টা বলেছি। বাকি একটা কি বলো তো ?
হ্যা, ঠিক ধরেছো। বাকি একটা হলো Y . চলো দেখি এটা দিয়ে কি বুঝায়? Y – এটা কোন কৌশল না। কিন্তু তুমি যখন কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাবে তখন বলবে Yes আমি পেরেছি। আমি পেরেছি আমার বাবা- মার স্বপ্ন পূরন করতে। গর্ব করে বলতে পারবে তুমি একজন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
তোমরা Youtube র্সাচ দিয়ে অনেক প্রি-মেড ভিডিও দেখতে পারবা।ফেসবুকে অনেক কোচিং সেন্টার লাইভে এডমিশন বিষয়ক নানা রকমের ক্লাস করায় সেগুলা দেখতে পারো
নিচের প্রতিষ্ঠান গুলোকে ফলো করতে পারো
Udvash Ummesh
youtube channel:https://www.youtube.com/user/OnnorokomPathshala
webside:http://onnorokompathshala.com/
Robi 10 Minuites School
webside:https://10minuteschool.com/
facebook page:https://www.facebook.com/10minuteschool/
Youtube channel:https://www.youtube.com/channel/UCL89KKkLs0tZKld-iIS3NGw
শেষ কথা :
পরিশেষে বলতে চাই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ২০২০-২০২১ প্রস্তুতির জন্যে প্রত্যেক সপ্তাহে নিজে নিজে পরীক্ষা দাও। তোমার ঘাটতি গুলো বের করে সেগুলো সমাধান করার চেষ্টা করো। ভুল হলে বার বার অনুশীলন কর। সম্ভব হলে বন্ধুদের সাথে group স্টাডি কর। এতে তুমি তোমার নিজের ভুল গুলো ধরতে পারবে এবং অন্যের ভুল ধরার মাধ্যমে শিখতে পারবে। আশা করি আমার কথা গুলো ঘরে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রস্তুতি নিতে একটু হলেও তোমাদের সাহায্য করবে।
অন্যরা যা পড়েছে ,
- বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য ইউরোপে স্কলারশীপ নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ
- সিলেট শিক্ষা ট্রাস্ট বৃত্তি সার্কুলার প্রকাশিত
- প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশন শিক্ষাবৃত্তি’র বিস্তারিত
- মেডিকেল ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২০-২১ MBBS Admission
- বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য ইউরোপে স্কলারশীপ নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ
- মহিলাদের জন্য আন্তর্জাতিক শিক্ষাবৃত্তি ২০২০-২০২১
- শিক্ষা লোন কি? কীভাবে এই লোন পাওয়া যাবে
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ২০২০-২০২১ প্রস্তুতি সম্পর্কিত সকল খবর সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করুন