এসএসসি ২০২১ অষ্টম সপ্তাহ বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও সমাধান নিচে বিস্তারিত আলোচন করা হলো
এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১, ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১, এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
অ্যাসাইনমেন্ট: স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ’ – প্রেক্ষিত পূর্ব পাকিস্তান – শীর্ষক প্রতিবেদন।
নির্দেশনা (সংকেত/পরিধি/ধাপ):
ক. আইয়ুব খানের সামরিক শাসন ও এর বিরুদ্ধে
সংঘটিত বিভিন্ন আন্দোলনের উল্লেখ।
খ. পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের
শাসকগােষ্ঠীর বিভিন্ন বৈষম্যের প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা।
গ. ছয় দফার প্রতিক্রিয়া (ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা ও গণঅভ্যুত্থান)।
ঘ. উপযুক্ত স্বাধিকার আন্দোলনসমূহ কীভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অনিবার্য করে তুলে তার বিশ্লেষণ।
এসএসসি ২০২১ সালের ৮ম সপ্তাহের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট নমুনা সমাধান
উত্তর শুরু
ক.উত্তরঃ
আইয়ুব খানের সামরিক শাসন ও এর বিরুদ্ধে সংঘটিত বিভিন্ন আন্দোলন
১৯৬২ সালের ৩০শে জানুয়ারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে
গ্রেফতার করা হয়। এ খবর পূর্ব পাকিস্তানে প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে ছাত্ররা সরকারবিরোধী প্রতিক্রিয়া
ব্যক্ত করে। ১লা ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা ধর্মঘট ডাকে এবং মিছিল বের করে। একনাগাড়ে ৫ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত
ধর্মঘট চলে। এভাবেই পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। ৭ই ফেব্রুয়ারি সরকার
অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়। ছাত্রদের ওপর পুলিশের ব্যাপক ধরপাকড় ও
নির্যাতন শুরু হয়। ১লা মার্চ আইয়ুব খান নতুন সংবিধান ঘোষণা দিলে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রসমাজ
বিক্ষোভ সমাবেশ ও ক্লাস বর্জন করে । ছাত্রদের সংবিধান বিরোধী এ আন্দোলনে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক,
রাজনীতিবিদদের অনেকে সমর্থন ব্যক্ত করেন ।
আইয়ুব খান ও পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান ছাত্রদের ওপর কঠোর দমন নীতি চালায় ।
১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন
১৯৬২ সালের আগস্ট মাসে শরিফ কমিশনের শিক্ষা
সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে ছাত্র আন্দোলন নতুন রূপ লাভ করে। এ প্রতিবেদনের সুপারিশে ছাত্রদের
ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয় । ফলে কঠোর আন্দোলন শুরু হয়। এ আন্দোলন ‘বাষট্টির
শিক্ষা আন্দোলন’ নামে পরিচিত। ১৫ই আগস্ট থেকে ১০ই সেপ্টেম্বর প্রতিদিন বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
১৭ই সেপ্টেম্বর হরতাল পালনকালে পুলিশের গুলিতে কয়েকজন নিহত এবং কয়েকশ’ আহত হয়।
এ আন্দোলনের ফলে শরিফ কমিশনের সুপারিশ স্থগিত হয়।
এই আন্দোলনের ফলে ছাত্ররা আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের অন্যতম শক্তিতে পরিণত হয় ।
১৯৬২ সালের ৮ই জুন সামরিক আইন স্থগিত করা হলে দলীয় রাজনীতির অধিকার ফিরে আসে।
আইয়ুব খান নিজেই কনভেনশন মুসলিম লীগ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
এসময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সকল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে আইয়ুববিরোধী মোর্চা গঠনের আহ্বান
জানান। ফলে আওয়ামী লীগ, নেজামে ইসলাম, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, কাউন্সিল মুসলিম লীগ ও
নূরুল আমিনের নেতৃত্বাধীন মুসলিম লীগ মিলে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট বা এনডিএফ গঠিত হয়।
এ ফ্রন্টের উদ্দেশ্য ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ১৯৫৬ সালের সংবিধানে ফিরে যাওয়া। খুব তাড়াতাড়ি এ ফ্রন্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ
১৯৬৩ সালের ৫ই ডিসেম্বরে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইন্তেকাল করেন।
১৯৬৪ সালের শুরুতেই আওয়ামী লীগ এনডিএফ থেকে বেরিয়ে আসে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নতুন যাত্রা শুরু হয়।
এর ফলে এনডিএফ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। ১৯৬৫ সালের ২রা জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আইয়ুব খানবিরোধী
একক প্রার্থী দেওয়ার জন্য আবার আওয়ামী লীগ, ন্যাপ, কাউন্সিল মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলাম প্রভৃতি
দল মিলে একটি জোট বা COP (Combined Opposition Party) গঠন করে । মোহাম্মদ আলী
জিন্নাহর বোন ফাতেমা জিন্নাহকে কপ-এর পক্ষে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করা হয়। নির্বাচনে মৌলিক
গণতন্ত্রীদের পূর্ব থেকেই আইয়ুব খান নিজের অনুকূলে নিয়ে আসেন। জনগণ ফাতেমা জিন্নাহর পক্ষে ব্যাপক
উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রকাশ করে। কিন্তু নির্বাচনে আইয়ুব খান জয়ী হন । প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর জাতীয় ও
প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন হয়। সেখানেও আইয়ুব খানের কনভেনশন মুসলিম লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে
১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ
১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান জন্ম নিলে কাশ্মীরকে
কেন্দ্র করে তাদের মাঝে বৈরিতার সূত্রপাত হয়। ভারত ও পাকিস্তান- উভয়ই কাশ্মীরকে তাদের অবিচ্ছেদ্য
অংশ বলে মনে করত । ১৯৪৭ সালেই তাদের মাঝে কাশ্মীর নিয়ে প্রথম যুদ্ধ বাধে। কিন্তু জাতিসংঘের
হস্তক্ষেপে তার অবসান হয়। কাশ্মীরকে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বাধে ১৯৬৫ সালে। আইয়ুব খানের দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল
ভারত আক্রমণ করে কাশ্মীর দখল করা। ১৯৬৫ সালে কাশ্মীরি নেতা শেখ আবদুল্লাহকে গ্রেফতার করা হলে
ভারতের কাশ্মীরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে । আইয়ুব খান এ সুযোগ গ্রহণ করেন।
প্রথমে সশস্ত্র গেরিলাদের কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করিয়ে গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করেন। অবশেষে ৬ই সেপ্টেম্বর
পাকিস্তান বাহিনী ভারত আক্রমণ করলে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের শুরু থেকেই ভারতীয় বাহিনী প্রাধান্য দেখিয়ে লাহোরের দিকে
এগিয়ে যায় । পাকিস্তানিদের এই চরম দুর্দিনে বাঙালি সেনারা অসীম সাহসের সাথে যুদ্ধ করে লাহোর রক্ষা
করেন। পাকিস্তানের শোচনীয় অবস্থার মুখে পাশ্চাত্য শক্তি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের হস্তক্ষেপে ১৭ দিনের
মাথায় যুদ্ধ বন্ধ হয় । ১৯৬৬ সালের জানুয়ারি মাসে সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী কোসিগিনের মধ্যস্থতায় তাসখন্দ শহরে ভারত পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি
স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্য দিয়ে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের অবসান হয়।
এ যুদ্ধের ফলে পূর্ব পাকিস্তানে আইয়ুববিরোধী চেতনা
প্রবলভাবে জাগ্রত হয়। কারণ যুদ্ধে এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, পূর্ব পাকিস্তানের কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না।
অরক্ষিত এ অঞ্চল যেকোনো সময় ভারতের আক্রমণের শিকার হতে পারত। এমনকি এ সময়
প্রশাসনিক দিক থেকে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে পূর্ব পাকিস্তানের যোগাযোগ একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
বাঙালি সেনারা জীবন বাজি রেখে লাহোর রক্ষা
করলেও আইয়ুব খান পূর্ব পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেননি।
খ) উত্তর
পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগােষ্ঠীর বিভিন্ন বৈষম্যের প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা
পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য
১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাব অনুসারে পাকিস্তান
রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু লাহোর প্রস্তাবের মূলনীতি অনুযায়ী পূর্ব বাংলা পৃথক রাষ্ট্রের মর্যাদা পায়নি।
দীর্ঘ ২৪ বছর পূর্ব বাংলাকে স্বায়ত্তশাসনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়।
এসময় পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামরিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক
ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য ও নিপীড়নমূলক নীতি অনুসরণ করে। এরই প্রতিবাদে তৎকালীন পূর্ব
পাকিস্তান অর্থাৎ পূর্ব বাংলায় স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে।
রাজনৈতিক বৈষম্য
১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মের পর থেকেই
সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ব পাকিস্তানকে রাজনৈতিকভাবে পঙ্গু করে পশ্চিম পাকিস্তানের মুখাপেক্ষী করে রাখা হয়।
লাহোর প্রস্তাবে পূর্ণ প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের কথা বলা হলেও পাকিস্তানি শাসকরা প্রথম থেকেই এ বিষয়ে
অনীহা প্রকাশ করে। গণতন্ত্রকে উপেক্ষা করে স্বৈরতন্ত্র, একনায়কতন্ত্র ও সামরিকতন্ত্রের মাধ্যমে তারা দেশ শাসন করতে থাকে। তারা পূর্ব পাকিস্তানের ওপর
ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠা করে সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শোষণ চালিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের সমৃদ্ধি ঘটায়।
বাঙালি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ওপর দমন-নিপীড়ন চালিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিবেশ অচল
করে রাখে। বারবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বাংলার জাতীয় নেতাদের অন্যায়ভাবে জেলে বন্দী
করে রাখে। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ বাঙালি হওয়া সত্ত্বেও পাকিস্তানের মন্ত্রিসভায় বাঙালি প্রতিনিধির সংখ্যা ছিল খুবই কম। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য
পাকিস্তানি শাসকরা জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন দিতে অনীহা প্রকাশ করে। ১৯৫৪ সালে
যুক্তফ্রন্টের নির্বাচিত সরকারকে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করে। পরবর্তী মন্ত্রিসভাগুলোকে বারবার ভেঙে দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের শাসনকার্য অচল করে রাখে।
অবশেষে পাকিস্তান সরকার ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয় ।
প্রশাসনিক বৈষম্য
পাকিস্তানের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে মূল চালিকাশক্তি ছিল সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তারা। ১৯৬২ সালে পাকিস্তানের
মন্ত্রণালয়গুলোতে শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার ৯৫৪ জনের মধ্যে বাঙালি ছিলেন মাত্র ১১৯ জন। ১৯৫৬ সালে
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ৪২০০০ কর্মকর্তার মধ্যে বাঙালির সংখ্যা ছিল মাত্র ২৯০০। ১৯৪৭ সালে করাচিকে রাজধানী করায় সরকারি অফিস-আদালতে
পশ্চিম পাকিস্তানিরা ব্যাপক হারে চাকরি লাভ করে। বলার অপেক্ষা রাখে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় সকল উচ্চপদে পশ্চিম পাকিস্তানিদের একচেটিয়া
আধিপত্য ছিল। সরকারের সব দপ্তরের সদর ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে । ভৌগোলিক দূরত্বের কারণে বাঙালির পক্ষে সেখানে গিয়ে চাকরি লাভ করা সম্ভব
ছিল না। ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা না দেওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায়
বাঙালি ছাত্রদের সাফল্য সহজ ছিল না ।
সামরিক বৈষম্য
পূর্ব পাকিস্তানের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানিদের বৈষম্যমূলক শাসনের আরেকটি ক্ষেত্র ছিল সামরিক
বৈষম্য । সামরিক বাহিনীতে বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব
ছিল অতি নগণ্য। প্রথম থেকেই সামরিক বাহিনীর শীর্ষ পদ পাঞ্জাবিরা দখল করে রেখেছিল। তারা বাঙালিদের
সামরিক বাহিনী থেকে দূরে রাখার নীতি গ্রহণ করে । সামরিক বাহিনীর নিয়োগের ক্ষেত্রে যে কোটা পদ্ধতি
অনুসরণ করা হয়, তাতে ৬০% পাঞ্জাবি, ৩৫% পাঠান
এবং মাত্র ৫% পশ্চিম পাকিস্তানের অন্যান্য অংশ ও পূর্ব পাকিস্তানের জন্য নির্ধারণ করা হয়। বাঙালির
দাবির মুখে সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও তা ছিল নগণ্য। ১৯৫৫ সালের এক হিসাবে দেখা যায় সামরিক বাহিনীর
মোট ২২১১ জন কর্মকর্তার মধ্যে বাঙালি ছিলেন মাত্র ৮২ জন। ১৯৬৬ সালে সামরিক বাহিনীর ১৭ জন শীর্ষ
পর্যায়ের কর্মকর্তার মধ্যে মাত্র ১ জন ছিলেন বাঙালি আইয়ুব খানের শাসনামলে মোট বাজেটের ৬০%
সামরিক বাজেট ছিল। এর সিংহভাগ দায়ভার বহন
করতে হতো পূর্ব পাকিস্তানকে, অথচ পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষার প্রতি অবহেলা দেখানো হতো।
অর্থনৈতিক বৈষম্য
পূর্ব পাকিস্তান পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক ভয়াবহ বৈষম্যের শিকার হয় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। এ কারণে পূর্ব
পাকিস্তান কখনও অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি। প্রাদেশিক সরকারের হাতে মুদ্রাব্যবস্থা ও
অর্থনৈতিক কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কেন্দ্রের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে পূর্ব পাকিস্তানের সকল আয় পশ্চিম
পাকিস্তানে চলে যেত। কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সকল ব্যাংক, বিমা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তর ছিল পশ্চিম
পাকিস্তানে । ফলে সহজেই সকল অর্থ পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যেত। পূর্ব পাকিস্তানের প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর নির্ভরশীল।
৮ম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি ২০২১ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা
উদ্বৃত্ত আর্থিক সঞ্চয় পশ্চিম পাকিস্তানে জমা থাকত বিধায় পূর্ব পাকিস্তানে কখনও মূলধন গড়ে ওঠেনি।
পাকিস্তান রাষ্ট্রের সকল পরিকল্পনা প্রণীত হতো কেন্দ্রীয় সরকারের সদর দপ্তর পশ্চিম পাকিস্তানে।
সেখানে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধি না থাকায় পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকরা পূর্ব পাকিস্তানকে ন্যায্য অধিকার
থেকে বঞ্চিত করত । জন্মলগ্ন থেকে পাকিস্তানে তিনটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গৃহীত হয়। প্রথমটিতে পূর্ব ও
পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল যথাক্রমে ১১৩ কোটি ও ৫০০ কোটি রুপি, দ্বিতীয়টিতে বরাদ্দ ছিল
৯৫০ কোটি রুপি এবং ১৩৫০ কোটি রুপি। তৃতীয়টিতে পূর্ব ও পশ্চিমের জন্য বরাদ্দ যথাক্রমে ৩৬% ও ৬৩%।
রাজধানী উন্নয়নের জন্য বরাদ্দের বেশিরভাগ ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য।
১৯৫৬ সালে করাচির উন্নয়নের জন্য ব্যয় করা হয়
৫৭০ কোটি টাকা, যা ছিল সরকারি মোট ব্যয়ের ৫৬.৪%। সে সময় পূর্ব পাকিস্তানের মোট সরকারি ব্যয়ের হার ছিল ৫.১০% । ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত
ইসলামাবাদ নির্মাণের জন্য ব্যয় করা হয় ৩০০ কোটি
টাকা, আর ঢাকা শহরের জন্য ব্যয় করা হয় ২৫ কোটি টাকা। পূর্ব পাকিস্তানে কাঁচামাল সস্তা হলেও
শিল্প-কারখানা বেশিরভাগ গড়ে উঠেছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। পূর্ব পাকিস্তানে কিছু শিল্প গড়ে উঠলেও
তার অধিকাংশের মালিক ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিরা। ফলে শিল্প ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানকে নির্ভরশীল থাকতে
হতো পশ্চিম পাকিস্তানের ওপর। পূর্ব পাকিস্তান থেক
স্বর্ণ এবং টাকা পয়সা নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে যেতে কোনো বাধা ছিল না। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তান থেকে স্বর্ণ
ও টাকা-পয়সা পূর্ব পাকিস্তানে আনার ওপর সরকারের বিধিনিষেধ ছিল ।
শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য
শিক্ষা ক্ষেত্রেও বাঙালিরা বৈষম্যের শিকার হয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানিরা মনে-প্রাণে চেয়েছিল পূর্ব
পাকিস্তানি বাঙালি যেন শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে থাকে। অথচ তারা পশ্চিম পাকিস্তানে শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পূর্ব পাকিস্তানে শিক্ষার
উন্নয়নের কোনো চেষ্টাই তারা করেনি। এছাড়া বাংলার পরিবর্তে উর্দুকে শিক্ষার মাধ্যম করা বা আরবি ভাষায়
বাংলা লেখার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের
শিক্ষাব্যবস্থায় আঘাত হানতে চেয়েছিল । শিক্ষা খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি চরম বৈষম্য দেখানো হয়। ১৯৫৫ থেকে ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে
শিক্ষা খাতে পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল ২০৮৪ মিলিয়ন রুপি এবং পূর্ব পাকিস্তানের জন্য ৭৯৭
মিলিয়ন রুপি। পাকিস্তানের সর্বমোট ৩৫টি বৃত্তির ৩০টি
পেয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তান এবং মাত্র ৫টি বরাদ্দ ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জন্য ।
সামাজিক বৈষম্য
রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত, হাসপাতাল,
ডাকঘর, টেলিফোন, টেলিগ্রাফ, বিদ্যুৎ প্রভৃতি ক্ষেত্রে
বাঙালিদের তুলনায় পশ্চিম পাকিস্তানিরা বেশি সুবিধা ভোগ করত। সমাজকল্যাণ ও সেবামূলক সুবিধা
বেশিরভাগ পশ্চিম পাকিস্তানিরা পেত। ফলে সামগ্রিকভাবে পশ্চিম পাকিস্তানিদের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত ছিল ।
সাংস্কৃতিক বৈষম্য
দুই অঞ্চলের ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি ছিল সম্পূর্ণ
আলাদা। পূর্ব পাকিস্তানের অধিবাসী ছিল মোট
জনসংখ্যার প্রায় ৫৬%। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি ছিল হাজার বছরের পুরনো। অপরদিকে ৪৪% জনসংখ্যার পশ্চিম পাকিস্তানে বিভিন্ন ভাষা, জাতি ও সংস্কৃতি
বিদ্যমান ছিল। উর্দুভাষী ছিল মাত্র ৩.২৭%। অথচ
সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলা ভাষা ও সুসমৃদ্ধ বাঙালি সংস্কৃতিকে মুছে ফেলার চক্রান্তে লিপ্ত হয় পশ্চিম পাকিস্তানি
শাসকরা। প্রথমেই তারা বাংলা ভাষাকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করে এবং বাংলা ভাষাকে উর্দু বর্ণে লেখানোর
ষড়যন্ত্র শুরু করে। বাঙালি সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে
রবীন্দ্রনাথের সঙ্গীত, নাটক, সাহিত্য। বাঙালি সংস্কৃতিতে আঘাত হানার জন্য রবীন্দ্রসঙ্গীত ও
রচনাবলি নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ উদযাপনকে হিন্দু প্রভাব বলে
উল্লেখ করে সেখানেও বাধাদানের চেষ্টা করা হয়।
এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১, ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১, এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
গ) উত্তরঃ
ছয় দফার প্রতিক্রিয়া (ঐতিহাসিক আগরতলা মামলা ও গণঅভ্যুত্থান)
পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালে
ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্য ছিল, ছয় দফা দাবি আদায়ের মাধ্যমে পূর্ব
পাকিস্তানকে বৈষম্যের হাত থেকে রক্ষা করা। মূলত ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ অবসানের পর পূর্ব পাকিস্তানের নিরাপত্তার প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানি সরকারের চরম
অবহেলা ও সীমাহীন বৈষম্যের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু সোচ্চার হন । ১৯৬৬ সালের ৫-৬ই ফেব্রুয়ারি লাহোরে
বিরোধীদলীয় নেতারা একটি সম্মেলনের আহ্বান করেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু লাহোর পৌঁছান। সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ‘ছয়
দফা’ প্রস্তাব পেশ করলে সম্মেলনের নেতৃবৃন্দ তা প্রত্যাখ্যান করেন। বঙ্গবন্ধু সম্মেলন বর্জন করেন এবং ছয় দফা সাংবাদিকদের সামনে প্রকাশ করে ঢাকায়
ফিরে আসেন। ২১শে ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুর নামে আমাদের বাঁচার দাবি : ছয় দফা কর্মসূচি’ শীর্ষক একটি
পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়।
দফাগুলো ছিল নিম্নরূপ :
১. লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংবিধান রচনা করে পাকিস্তানকে একটি ফেডারেল রাষ্ট্র হিসেবে গঠন
করতে হবে। এটি হবে সংসদীয় পদ্ধতির যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা।
২. প্রাপ্তবয়স্কদের সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে
নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক আইনসভা হবে সার্বভৌম ফেডারেল
সরকারের হাতে থাকবে প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়। অন্যান্য বিষয় থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে।
স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ-প্রেক্ষিত পূর্ব পাকিস্তান-শীর্ষক প্রতিবেদন
৩. দেশের দুই অঞ্চলের জন্য সহজে বিনিময়যোগ্য দুটি
মুদ্রা চালু থাকবে। মুদ্রা লেনদেনের হিসাব রাখার জন্য দুই অঞ্চলের জন্য দুইটি স্বতন্ত্র স্টেট ব্যাংক থাকবে।
মুদ্রা ও ব্যাংক পরিচালনার ক্ষমতা থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে। দুই অঞ্চলের জন্য একই মুদ্রা থাকবে,
তবে সংবিধানে এমন ব্যবস্থা রাখতে হবে, যাতে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে মুদ্রা ও মূলধন পাচার হতে
না পারে। একটি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে এবং দুইটি আঞ্চলিক রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে।
৪. সকল প্রকার কর ও শুল্ক ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা
থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে আদায়কৃত অর্থের
একটি নির্দিষ্ট অংশ ফেডারেল তহবিলে জমা হবে। এ দ্বারা ফেডারেল সরকার ব্যয় নির্বাহ করবে ।
৫. বৈদেশিক মুদ্রা ও বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে
প্রদেশগুলোর হাতে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে। বৈদেশিক বাণিচ্চ ও সাহায্যের ব্যাপারে প্রদেশগুলো যুক্তিযুক্ত
হারে ফেডারেল সরকারের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক। মুদ্রার চাহিদা মিটাৰে।
৬. আঞ্চলিক সংস্কৃতি ও স্বাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য প্রদেশগুলো নিজস্ব মিলিশিয়া বা আধা সামরিক
বাহিনী গঠন ও পরিচালনা করতে পারবে।
ঘ) উত্তরঃ
উপযুক্ত স্বাধিকার আন্দোলনসমূহ যেভাবে
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে অনিবার্য করে তুলে তার বিশ্লেষণ
বঙ্গ অতিশয় প্রাচীন ভূমি। রামায়ণ-মহাভারতের আখ্যানে এর উল্লেখ আছে। হাজার হাজার বছরের পরিক্রমায় একপর্যায়ে এই জনপদের নাম হয়েছে
বাংলাদেশ। এর অধিবাসীরা হলেন বাঙালি। বাঙালির আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার স্ফুরণ ঘটে ইংরেজ ঔপনিবেশিক আমলে। ওই সময় এ অঞ্চলে রাজনৈতিক দল তৈরি
হয়, সীমিত আকারে চালু হয় জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং একই সঙ্গে শুরু হয় উপনিবেশবিরোধী
স্বাধীনতার লড়াই। এটি ছিল সর্বভারতীয় জাতীয়তাবাদের শুরুর সময়।
বিশ শতকের গোড়ার দিকে পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশকে নিয়ে নতুন একটি প্রদেশ হলে এ অঞ্চলে
অন্য রকম এক জাতীয়তাবোধ তৈরি হয়েছিল। এটাই হলো ১৯০৫ সালের ‘বঙ্গভঙ্গ’। ১৯১১ সালে ‘বঙ্গভঙ্গ’
রদ করা হলে পূর্ববঙ্গের মুসলমানরা তাঁদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নিয়ে ভাবনায় পড়ে যান। তখন থেকে শুরু করে ১৯৪৭ সালের ভারতভাগ পর্যন্ত আঞ্চলিক ও ধর্মীয়
পরিচিতির এক মিশেল থেকে বাঙালি মুসলমানের রাজনৈতিক মনস্তত্ত্ব গড়ে ওঠে। এর একটি প্রকাশ
দেখা যায় ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহোরে মুসলিম
লীগের এক অধিবেশনে স্যার জাফরউল্লাহ খানের মুসাবিদা করা প্রস্তাবে, যেখানে তিনটি সার্বভৌম রাষ্ট্র নিয়ে ভারতীয় কনফেডারেশনের কথা বলা হয়েছিল।
প্রস্তাবটি পাঠ করেছিলেন বাংলার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা এ কে (আবুল কাশেম) ফজলুল হক। এই কনফেডারেশনের একটি ইউনিট হওয়ার কথা
উত্তর-পূর্ব ভারতের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটি নিয়ে, অর্থাৎ বাংলা ও আসাম।
স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ-প্রেক্ষিত পূর্ব
পাকিস্তান-শীর্ষক প্রতিবেদন
কিন্তু বাঙালি মুসলমান তখন সর্বভারতীয় ইসলামি
জোশে আচ্ছন্ন। ওই সময় বাংলার সদ্য নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী দিল্লিতে
মুসলিম লীগের এক কনভেনশনে ‘এক পাকিস্তানের’
পক্ষে প্রস্তাব উত্থাপন করলে ভারতের পূর্বাঞ্চলে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন ভন্ডুল হয়ে যায়। বাংলা
মুলুকের বড়-ছোট প্রায় সব নেতা তখন পাকিস্তানের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন। ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজিত
রাজনীতির অনিবার্য গন্তব্য হলো ভারতভাগ। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট তৈরি হলো পাকিস্তান। আধুনিক
বিশ্বে ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া এটিই প্রথম রাষ্ট্র।
দ্বিতীয়টি হলো ইসরায়েল, ১৯৪৮ সালের মে মাসের ১৪ তারিখ।
১৯৪৭ সালের জুন মাসেই শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা বিতর্ক।
১৯৪৭ সালের ৩ জুন ভাইসরয় লর্ড মাউন্টব্যাটেন যখন ভারতভাগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন, তখনই
সংবাদপত্রে খবর বেরোয় যে পশ্চিম পাকিস্তানের
নেতারা উর্দুকে হবুরাষ্ট্র পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করতে
চাইছেন। এর বিরোধিতা করে বেশ কয়েকজন বাঙালি মুসলমান বুদ্ধিজীবী প্রবন্ধ লেখেন।
এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা
তাঁদের মধ্যে
ছিলেন আবদুল হক, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল মনসুর আহমদ, মুহম্মদ
এনামুল হক, ফররুখ আহমদ, আবুল হাশিম প্রমুখ।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আগেই বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে এসব লেখা প্রকাশিত হয়েছিল। এর ভিত্তিতেই
পরে এ দেশে গড়ে উঠেছিল ভাষা আন্দোলন, যার
মাধ্যমে পূর্ববঙ্গ তথা পূর্ব পাকিস্তানে জাতীয়তাবোধ তৈরির বীজ বোনা হয়েছিল।
সুতরাং বলা চলে, পরবর্তী সময় এ দেশে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের যে ধারা তৈরি হয়েছিল, তার
প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলেন বুদ্ধিজীবীরা। সেখান থেকেই শুরু স্বাধিকার ভাবনার। এর একটি সংগঠিত
রূপ ছিল ১৯৪৭ সালের পয়লা সেপ্টেম্বর ঢাকায় ‘তমদ্দুন মজলিস’-এর জন্ম হওয়া। ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্র এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭ তাঁরা পাকিস্তানের
রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু শিরোনামে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করেন। এতে লিখেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষক কাজী মোতাহার হোসেন এবং কলকাতা থেকে
প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেহাদ–এর সম্পাদক আবুল মনসুর আহমদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক
এবং তমদ্দুন মজলিসের সম্পাদক আবুল কাশেম ভাষা বিষয়ে একটি প্রস্তাব লেখেন। প্রস্তাবে বলা হয়, পূর্ব
পাকিস্তানের শিক্ষা, আদালত ও অফিসের ভাষা হবে
বাংলা এবং পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের ভাষা হবে বাংলা ও উর্দু।
স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ-প্রেক্ষিত পূর্ব
পাকিস্তান-শীর্ষক প্রতিবেদন
বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি এক দিনে তৈরি হয়নি। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে যদি একটি দালানের সঙ্গে তুলনা করা হয়,
তাহলে বুঝতে হবে এটি তৈরি করতে অনেকগুলো
ইটের দরকার হয়েছিল। এর প্রতিটি ইটের পেছনে লুকিয়ে আছে ইতিহাস। অশ্রু, ঘাম, মেধা ও রক্ত;
অনেক অনেক মানুষের। রাষ্ট্রভাষার দাবি যদি এর প্রাথমিক ভিত্তি হয়ে থাকে, তাহলে আঞ্চলিক
স্বায়ত্তশাসনের দাবি ছিল এর দেয়াল।
১৯৫০ সালের অক্টোবরে ঢাকায় রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের একটি সভায় তৈরি হয় ডেমোক্রেটিক
ফেডারেশন। এর উদ্যোগে ৪-৫ নভেম্বর আতাউর রহমান খানের সভাপতিত্বে ঢাকায় সংবিধান বিষয়ে
একটি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে পাকিস্তানের দুই অংশের জন্য পরিপূর্ণ আঞ্চলিক
স্বায়ত্তশাসনের একটি রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছিল। সম্মেলনে গৃহীত সুপারিশগুলোর মধ্যে ছিল:
১. রাষ্ট্রের নাম হবে পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র (ইউনাইটেড
স্টেটস অব পাকিস্তান)। এর দুটি অংশ থাকবে, পূর্ব
পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান।
২. পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রভাষা হবে বাংলা ও উর্দু।
৩. দেশরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয় কেন্দ্রের হাতে থাকবে।
দেশরক্ষা বাহিনীর দুটি ইউনিট থাকতে হবে, যার একটি থাকবে পূর্ব পাকিস্তানে এবং অন্যটি পশ্চিম পাকিস্তানে।
প্রতিটি অঞ্চলের দেশরক্ষা বাহিনী সেই অঞ্চলের লোক দিয়েই গঠিত হবে। পূর্ব পাকিস্তনের একটি আঞ্চলিক
বৈদেশিক মন্ত্রণালয় থাকবে। অন্য সব ক্ষমতা থাকবে
প্রদেশের হাতে। প্রদেশের অনুমতি ছাড়া কেন্দ্র কোনো কর ধার্য করতে পারবে না।
স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ-প্রেক্ষিত পূর্ব
পাকিস্তান-শীর্ষক প্রতিবেদন
স্বায়ত্তশাসনের ফর্মুলা হিসেবে এ প্রস্তাবগুলো ছিল
সুনির্দিষ্ট, প্রাঞ্জল এবং সোজাসাপটা। কিন্তু বাঙালি
মুসলমানের পাকিস্তান নিয়ে মাতামাতি তখনো চলছে। এখানে উল্লেখ করা দরকার, পাকিস্তানের পূর্বাংশের
নাম ছিল পূর্ববঙ্গ। পশ্চিম পাকিস্তানের চারটি প্রদেশকে
একীভূত করে পশ্চিম পাকিস্তান নাম রাখা হয় ১৯৫৫ সালে। ওই সময় পূর্বাঞ্চলের নাম হয় পূর্ব পাকিস্তান।
১৯৫৬ সালের সংবিধানের মাধ্যমে এটি কার্যকর করা হয়। কিন্তু বাঙালি তরুণ ও অগ্রগণ্য রাজনীতিবিদেরা
পূর্ব পাকিস্তান নামটি চালু করে দেন আরও আগে।
ফলে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি তৈরি হয় পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ এবং ১৯৪৯ সালের ২৩
জুন গঠন করা হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পূর্ব পাকিস্তান নামটি এখানে চাপিয়ে দেওয়া
হয়নি। এটাই ইতিহাসের সত্য। পাকিস্তানবাদের নেশা থেকে বাঙালির মুক্ত হতে আরও সময় লেগেছিল।
১৯৫৪ সালে পূর্ববঙ্গে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন উপলক্ষে ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তান
আওয়ামী মুসলিম লীগ, পাকিস্তান কৃষক-শ্রমিক পার্টি, পাকিস্তান নেজামে ইসলাম, পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল ও পাকিস্তান খেলাফতে রব্বানী পার্টি মিলে তৈরি করে
যুক্তফ্রন্ট নামের একটি রাজনৈতিক জোট। জোটের সভাপতি হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ফ্রন্টের জন্য
একটি কর্মসূচি তৈরির দরকার পড়ে। ওই সময় আওয়ামী লীগের একটি ৪২ দফা কর্মসূচি ছিল।
এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১
আওয়ামী লীগ নেতা আবুল মনসুর আহমদ অনেকগুলো দফা যোগ-বিয়োগ করে তৈরি করেন ২১ দফা। এর ১৯ নম্বর দফায় বলা হলো:
স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ-প্রেক্ষিত পূর্ব
পাকিস্তান-শীর্ষক প্রতিবেদন লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পূর্ব বাংলাকে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন ও সার্বভৌম করা হবে
এবং দেশরক্ষা, পররাষ্ট্র ও মুদ্রা ব্যতীত আর সমস্ত বিষয় পূর্ব বাংলার সরকারের হাতে আনা হবে এবং
দেশরক্ষা বিভাগের স্থলবাহিনীর হেডকোয়ার্টার পশ্চিম পাকিস্তানে ও নৌবাহিনীর হেডকোয়ার্টার পূর্ব
পাকিস্তানে স্থাপন করা হবে এবং পূর্ব পাকিস্তানে অস্ত্র নির্মাণের কারখানা নির্মাণ করে পূর্ব পাকিস্তানকে
আত্মরক্ষায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হবে। আনসার বাহিনীকে সশস্ত্র বাহিনীতে পরিণত করা হবে। দলীয় সরকারের
অধীনে এটাই ছিল এ দেশের প্রথম অবাধ নির্বাচন। নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থীরা একচেটিয়া জয়
পেয়েছিলেন। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের হাতে প্রদেশের ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে জল ঘোলা হয় অনেক। ১৯৫৫
সালে পাকিস্তানের দুই প্রদেশের মধ্যে ‘সংখ্যাসাম্য’ নীতি বাস্তবায়নের ফলে পূর্ব পাকিস্তান তার সংখ্যাগরিষ্ঠতার শক্তি হারায়।
তত দিনে পূর্ব পাকিস্তানে প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এর
চালকের ভূমিকায় দলের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর একটি সম্মেলনে তিনি
কার্যসূচিতে তাঁর একটি প্রস্তাব যুক্ত করার দাবি জানান। অন্যরা রাজি না হওয়ায় তিনি সম্মেলন থেকে ওয়াকআউট করে সাংবাদিকদের কাছে তাঁর প্রস্তাব
তুলে ধরেন। এটাই ছিল আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য সুনির্দিষ্ট ছয়টি ধারাসংবলিত প্রস্তাব। এটিই ছয় দফা
হিসেবে পরে ব্যাপক পরিচিতি পায়।
স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ-প্রেক্ষিত পূর্ব
পাকিস্তান-শীর্ষক প্রতিবেদন
এ দেশের রাজনীতিতে দফাভিত্তিক দাবিদাওয়ার চল অনেক দিন ধরে। দফার সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায়
গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলো অনেক সময় হারিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রস্তাবিত ছয় দফা ছিল শুধু
স্বায়ত্তশাসনকেন্দ্রিক। এটি পরে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের ভিত তৈরি করে দেয়। এর
পক্ষে প্রবল জনমত গড়ে ওঠে। তিনি গ্রেপ্তার হন।
গ্রেপ্তার হন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অধিকাংশ নেতা। বাইরে থাকলেন আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক
সম্পাদিকা আমেনা বেগম এবং ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল আলম খান। আমেনা
বেগম আওয়ামী লীগ অফিস পাহারা দেন এবং
অষ্টম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি ২০২১ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা
সিরাজুল আলম খান ছাত্রলীগের তরুণদের নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন।
১৯৬৮ সালের জুন মাসে পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবকে ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’য় জড়িয়ে তাঁর
রাজনীতি শেষ করে দেওয়ার ফন্দি আঁটে। ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সভাপতি
মাওলানা ভাসানী ঘোষণা দিয়ে গণ–আন্দোলনের সূচনা করেন। ৭-৮ ডিসেম্বর পরপর দুই দিন ঢাকায়
হরতাল হয়। ১৯৬৯ সালের ৮ জানুয়ারি ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নের দুটি অংশ এবং জাতীয় ছাত্র ফেডারেশনের
একটি অংশ নিয়ে তৈরি হয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ। এর সঙ্গে যুক্ত হয় ডাকসু। তারা তৈরি করেন
১১ দফা কর্মসূচি। এর মধ্যে স্বায়ত্তশাসনের ছয় দফা পুরোপুরি ছিল। তিন মাস তুমুল আন্দোলন হয়।
ছাত্রদের পাশাপাশি শ্রমিকেরাও আন্দোলনে যোগ দেন।
এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১
ওই সময় নতুন এক স্লোগান তৈরি হয়, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’। এই স্লোগানে অনেকটাই
পরিষ্কার হয়ে যায় ভবিষ্যতের রূপকল্প—রাষ্ট্রচিন্তা।
১৯৬৯ সালের ২৫ মার্চ নতুন করে জারি হয় সামরিক শাসন। আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি তত দিনে এক
দফায় রূপান্তরিত হয়েছে—তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা।
স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ-প্রেক্ষিত পূর্ব পাকিস্তান-শীর্ষক প্রতিবেদন
বাঙালির ঠিকানা খোঁজার লড়াই নতুন মাত্রা পায় ১৯৬৯ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মধুর ক্যানটিন চত্বরে
ছাত্রলীগের এক কর্মিসভায়। সেখানে হঠাৎ করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আফতাব আহমদ
স্লোগান দিয়ে ওঠেন, ‘জয় বাংলা’। তাৎক্ষণিকভাবে এর রাজনৈতিক গুরুত্ব অন্যরা অতটা না বুঝলেও কয়েক
মাসের ব্যবধানে এটি হয় বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতীকী স্লোগান। যার মাধ্যমে ফুটে উঠেছিল একটি
জাতিরাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা। ১৯৭০ সালের ৭ জুন রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আওয়ামী
লীগের নির্বাচনী জনসভায় দলের সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে উচ্চারণ
করেন জয় বাংলা। তত দিনে তিনি অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছেন। তিনি তখন বঙ্গবন্ধু।
এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১, ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১, এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে
একচেটিয়ায় এবং সারা পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ জয় পায়। এই নির্বাচন ছিল শেখ মুজিবের নেতৃত্ব এবং ছয় দফা
কর্মসূচির প্রতি জনগণের ম্যান্ডেট। পাকিস্তানি সামরিক
জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে কালক্ষেপণ ও গড়িমসি করায় পূর্ব পাকিস্তান ফুঁসে ওঠে। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ দুপুর
থেকে পূর্ব পাকিস্তান শব্দটি আর এ দেশে উচ্চারিত হয়নি। তখন থেকেই এটি বাংলাদেশ। ভাষার দাবিতে
যে আন্দোলন ২৩ বছর আগে শুরু হয়েছিল, তা স্বাধীনতার দাবিতে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছে। তখন সব
ছাপিয়ে একটি স্লোগানই সবার মুখে মুখে—বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। এই পর্বে
ছিল অনেক রহস্য, নাটকীয়তা, ষড়যন্ত্র আর কূটনীতি—যার জট এখনো পুরোটা খোলেনি। এটি
ছিল এই জনপদের কয়েক হাজার বছরের ইতিহাসের
সবচেয়ে বড় বাঁকবদলের ক্ষণ। ২৫ দিনের অসহযোগ আন্দোলন, ২৬০ দিনের মুক্তিযুদ্ধ, লাখ লাখ মানুষের
আত্মত্যাগ—এসবের বিনিময়ে স্বাধীন হলো বাংলাদেশ।
ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১, ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১, ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১,৷ ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১, ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান অষ্টম সপ্তাহ এসএসসি ২০২১,
এসএসসি ২০২১ এসাইনমেন্ট সমাধান লিস্ট
পরীক্ষার নাম | সপ্তাহ নাম্বার | এসাইনমেন্ট উত্তর |
এসএসসি ২০২১ | ১ম সপ্তাহ | উত্তর দেখুন |
এসএসসি ২০২১ | ২য় সপ্তাহ | উত্তর দেখুন |
এসএসসি ২০২১ | ৩য় সপ্তাহ | উত্তর দেখুন |
এসএসসি ২০২১ | ৪র্থ সপ্তাহ | উত্তর দেখুন |
এসএসসি ২০২১ | ৫ম সপ্তাহ | উত্তর দেখুন |
এসএসসি ২০২১ | ৬ষ্ঠ সপ্তাহ | উত্তর দেখুন |
পরীক্ষার প্রশ্ন সলভ, এসাইনমেন্ট সলভ, বৃত্তি, শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, চাকরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহ সকল খবর সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার এসাইনমেন্ট ইতিহাস, ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার এসাইনমেন্ট বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান, Assignment ssc 2021 8th week answer history, History assignment ssc 2021 answer 8th week, Ssc assignment 2021 8th week answer history pdf download, SSC assignment 2021 8th week answer, SSC assignment 2021 answer, Ssc assignment 2021 history 8th week, SSC assignment 2021 PDF download, SSC assignment 2021 question, Ssc assignment history 8th week answer, ইতিহাস এসাইনমেন্ট ৮ম সপ্তাহ, এসএসসি 2021 বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অষ্টম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর, এসএসসি এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২২, এসএসসি ব্যাচ 2021 বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ৮ম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর,
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এসাইনমেন্ট, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এসাইনমেন্ট ৮ম সপ্তাহ, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা নবম দশম শ্রেণি এসাইনমেন্ট, এসএসসি বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অষ্টম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান, এসএসসি বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অষ্টম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর, এসএসসি বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অষ্টম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সলুশন, এসএসসি বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ৮ম সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১, এসএসসি ৮ম সপ্তাহ বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১, এসএসসি ৮ম সপ্তাহ বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর,
এসএসসি অষ্টম সপ্তাহ বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১, এসএসসি অষ্টম সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এসাইনমেন্ট সমাধান ২০২১, এসএসসি অষ্টম সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা এসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১,