নরসিংদী রেলস্টেশনে পোশাকের কারণে তরুণীকে হেনস্তা প্রসঙ্গে উচ্চ আদালতের বক্তব্যকে অভিবাদন জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
আজ রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে এ মন্তব্যের জন্য বাংলাদেশের উচ্চ আদালতকে অভিবাদন ও স্যালুট জানান তারা।
একই সঙ্গে পোশাকের নামে পশ্চিমা অপসংস্কৃতি আমদানিকারকদের আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা ।
পড়ুন, মেটা ফেসবুক দিচ্ছে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার টাকার ফেলোশিপ
মানববন্ধনে হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের শিক্ষার্থী মুহম্মদ মাহদী হাসান বলেন, গত ১৬ই আগস্ট একটি মামলার পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত পোশাকের স্বাধীনতার নাম দিয়ে যারা পশ্চিমা সংস্কৃতি আমদানি করছে, তাদের বিরুদ্ধে বলেছেন।
আমরা উচ্চ আদালতের এ সুন্দর পর্যবেক্ষণ ও বক্তব্যকে স্যালুট জানাই। পাবলিক প্লেস আর প্রাইভেট প্লেসের পোশাক কখনো এক নয়। পাবলিক প্লেসে কেউ অশালীন পোশাক পরলে তা অনেকের জন্য বিরক্তি বা নুইসেন্সের কারণ হতে পারে।
মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবু মুরসালিন বলেন, পৃথিবীতে সর্বোচ্চ ধর্ষণ প্রবণ রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইডেন, কোস্টারিকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি ইত্যাদি রাষ্ট্রগুলো রয়েছে।
এ রাষ্ট্রগুলোতে অনেক নারীকেই তুলনামূলক ছোট পোশাক পরতে দেখা যায়। এ দুই বিষয়ের মধ্যে কোন সম্পর্ক রয়েছে কিনা, তা অবশ্যই গবেষণার বিষয়।
ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ খান বলেন, পশ্চিমা রাষ্ট্র থেকে যদি কিছু আনতেই হয়, তবে জ্ঞান-বিজ্ঞান আনা উচিত, অপসংস্কৃতি নয়।
এসময় যারা দেশের সংস্কৃতিকে অবমাননা করে পশ্চিমা অপসংস্কৃতিকে আমদানি করে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করেন এই শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য, গতো ১৮ মে নরসিংদী রেল স্টেশনে ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দুই তরুণ ও এক তরুণী। মেয়েটির পরনে ছিল জিন্স প্যান্ট ও টপস। তাই দেখে স্টেশনে অবস্থানরত মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলা নামের এক মাতৃতুল্য বয়োজ্যেষ্ঠ নারী স্নহ সুলোভভাবে স্বল্প পোশাক পরিহিত তরুণীকে সতর্ক করেছিলেন। এক পর্যায়ে তরুণী ও নারীর মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়।
এবং পরে আরও কয়েকজন ব্যক্তি এসে তরুণীকে অপদস্ত করেছে বলে জানা যায়।
তরুণীকে হেনস্থার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
এ প্রেক্ষিতে তরুণীকে হেনস্তার অভিযোগে এনে মামলা করা হয় এবং ১৬ আগস্ট সেই মামলার জামিন শুনানিতে কিছু পর্যবেক্ষণ দেন উচ্চ আদালত। যা, প্রথমআলোসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ করা হয় । এসব জাতীয় পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায়, উচ্চ আদালত পোশাকের স্বাধীনতার নাম দিয়ে দেশীয় মূল্যবোধের বিপরীতে যারা পশ্চিমা অপসংস্কৃতি আমদানি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, আদালত প্রশ্ন তুলে বলেছেন, সভ্য দেশে এমন পোশাক পরে রেলস্টেশনে যাওয়া যায় কি না? আদালতের কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ করার অধিকার আছে। পোশাক সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে না? যে সমাজে যাবেন, সে সমাজের আর্থসামাজিক অবস্থাও একটি বিষয়।
আরো পড়ুন, জিনিয়াস বৃত্তি পেল স্নাতক পর্যায়ের ৩৫৪৯ শিক্ষার্থী
সকল প্রকার বৃত্তির খবর সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করুন।