“একটা জিনিস খেয়াল করলাম, আব্বা একটু চালাক না হলি পরে দুনিয়ায় টেকা খুব কঠিন”
চঞ্চল চৌধুরীর এই ডায়লগ দিয়েই শুরু করলাম। বর্তমানে এই বছরে ঈদ কে সামনে রেখে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ১০০% অনলাইনভিত্তিক করেছে। আর এই টিকিট পেতে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে।
ট্রেনের টিকিট কাটার প্রতিযোগিতাকে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সাথে তুললা করলে মন্দ হবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় এক সিটের বিপরীতে ১৫-২০ জন বা তারো বেশী প্রতিযোগিতা করে।
ঠিক সেইম ভাবে ট্রেনের টিকিট কাটতে আজ ৯ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে ৬৭৯৩৯ টিকিটের বিপরীতে ১২ লক্ষ ১৮ হাজার ৩৩ জন এক সাথে সার্ভারে টিকিটের জন্য ঢুকেছে।
এই হিসাবে আমরা বলতে পারি ১ সিটের বিপরীতে আজ প্রায় ১৮ জন প্রতিযোগিতা করেছে। আজ ৯/০৪/২০২৩ তারিখে দেওয়া হয়েছে ১৯/০৪/২০২৩ তারিখের টিকিট। আগামীকাল ১০ এপ্রিল দেওয়া হবে ২০ তারিখের টিকিট, পরশুদিন ১১ তারিখ দেওয়া হবে ২১ তারিখের টিকিট।
তাহলে ধারণা করতে পারছেন এই ১০,১১ তারিখে এক সাথে সার্ভারে কতো লাখ মানুষ হিট করবে। এই প্রতিযোগিতার ভীড়ে স্বভাবতই সবাই টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা একদম ক্ষীণ।
তবে এই প্রতিযোগিতায় একটি সিট আপনার করে নিতে চাইলে কিছু টেকনিক ফলো করলে নিশ্চিত জয় হবে আপনার জেনে রাখুন।
আসুন এবারে টিকিট পাওয়ার নিনজা টেকনিক গুলো জানি:
১) প্রথমত অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে জাতীয় পরিচয়পত্র/ যাদের NID নাই তারা জন্ম নিবন্ধন নাম্বার দিয়ে ভেরিফাই করে একটি অ্যাকাউন্ট করতে হবে।
২) অনলাইনে টিকিট ২ ভাবে কাটা যায় ১) অ্যাপস এর মাধ্যমে & ২) রেলওয়ের ওয়েব সার্ভারের মাধ্যমে৷
এবারের পরিসংখ্যান(ব্যক্তিগত পরিসংখ্যান) বলছে অ্যাপস এর থেকে রেলওয়ের ওয়েব সার্ভার খুব ফাস্ট কাজ করছে, কাজেই রেলওয়ের ওয়েব সার্ভার থেকেই ট্রাই করাই ভালো হবে ।
রেলওয়ের ওয়েব সার্ভার লিংক: https://eticket.railway.gov.bd/
৩) সার্ভারে ঢোকার পর এরকম একটা ইন্টারফেস আসবে। ধরুন আপনি যাবেন ঢাকা থেকে রংপুর।আপনার গন্তব্য রংপুর। মানে আপনি ‘ রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের টিকিট করতে চাচ্ছেন।
রংপুর যাদের গন্তব্য তারা সবাই (ম্যাক্সিমাম) ঢাকা টু রংপুর দিয়ে চেষ্ঠা করবে। এই সুযোগে সামান্য একটু টেকনিক খাটিয়ে আপনি যদি রংপুরের আশে-পাশের স্টেশন গুলো দিয়ে সার্চ দেন, যেমন ধরেন: আপনি দিতে পারেন ঢাকা টু পীরগঞ্জ, অথবা ঢাকা টু কাউনিয়া/ ঢাকা টু পীরগাছা তাহলে টিকিট পাওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকবে।
আমি লিখলাম দেখেই যে শুধুমাত্র এই স্টেশন গুলোর নাম দিয়েই সার্চ করবেন ব্যাপারটা এমন নয়। আপনি অবশ্যই অনান্য স্টেশন গুলোর নাম দিয়েও সার্চ করতে পারেন।
এই টেকনিক অ্যাপ্লাই করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে যে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে চান সেই ট্রেনের গন্তব্য স্টেশনগুলোর লিস্ট জানতে হবে।
আমি ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ট্রেনের টিকিট প্রাপ্তি স্টেশনগুলোর নাম নিচে ছবিতে দিয়ে দিলাম:
(বি,দ্র: বাংলাদেশ রেলওয়ে এবারে স্বচ্ছতার সাথে ১০০% অনলাইন ভিত্তিক টিকিটের ব্যবস্থা করেছে। কম সংখ্যক সিটের বিপরীতে লাখ লাখ মানুষ যদি এক সাথে টিকিট পেতে চায় তাহলেতো সেটা সম্ভব না।
কাজেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কে গালাগালি না করে টেকনিক্যালি টিকিট কাটার চেষ্ঠা করুন। এবারের পরিসংখ্যান বলছে ম্যাক্সিমাম মানুষে টিকিট ক্রয় করতে পেরেছে।
আপনি পাননি মানে আপনার ‘ব্যাডলাক’। বার বার চেষ্ঠা করুন। ১৫-২০ মিনিট পর পর চেষ্ঠা করুন।
অনেকেই টিকিট রিটার্ন করে আবার অনেকেই টিকিট কনফার্ম করতে গিয়ে সঠিক ভাব্র হয় না ফলে টিকিট টি আবার অনলাইনে শো করে। এভাবেও আপনি টিকিট পেতে পারেন। সবার জন্য শুভকামনা।