ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এসাইনমেন্ট সমাধান এইচএসসি ২০২১
এইচএসসি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ১ম এসাইনমেন্ট প্রথম পত্র বইয়ের প্রথম অধ্যায় – প্রাক ইসলামি আরব থেকে নেওয়া হয়েছে ।
আরো দেখুনঃ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি চতুর্থ সপ্তাহের সমাধান
এসাইনমেন্টঃ
আরব প্রাক ইসলামি যুগে শহরবাসি ও মরুবাসি যাযাবরদের জীবনে আর্থসামাজিক রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রভাবসমূহের তুলনামূলক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করাে।
প্রাক ইসলামিযুগে শহরবাসী এবং মরুবাসী আরবদের আর্থসামাজিক জীবনযাত্রার পার্থক্যঃ
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এসাইনমেন্ট সমাধান ১ম পত্র
ভূপ্রকৃতির তারতম্য অনুসারে আরবের অধিবাসীদের দুই শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায় – শহরের স্থায়ী বাসিন্দা ও মরুবাসী যাযাবর, যারা বেদুইন’ নামে পরিচিত। নিম্নে তাদের আর্থসামাজিক অবস্থার পার্থক্য বর্ণনা করা হলাে :
প্রাক ইসলামি যুগের রাজনৈতিক অবস্থা
তমসার যুগে আরবের রাজনৈতিক অবস্থা অতীব শােচনীয় এবং নৈরাশ্যজনক ছিল। শহরবাসী আরবগণের রাজনৈতিক অবস্থা তুলানামূলকভাবে কিছুটা ভালাে থাকলেও মরুবাসী আরবগণের রাজনৈতিক আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও নৈরাজ্যজনক ছিল।
আরবে তখন আইন কানুনের কোনাে বালাই ছিল না। কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থার সমন্ধে তারা। ছিল সম্পূর্ণ অজ্ঞ। সমগ্র আরব শত-সহস্র গােত্রে বিভক্ত ছিল। গােত্র শাসনই ছিল আরবদের রাষ্ট্রীয় জীবনের মূল ভিত্তি। প্রত্যেক গােত্রের একজন করে দলপতি বা শেখ থাকতাে।
সাহস,বুদ্ধি,আর্থিক অবস্থা,পদ মর্যাদা এবং অভিজ্ঞতা বিচার করে তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দলপতি নির্বাচন করতাে। শেখের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করলেও তারা ব্যক্তি স্বাধীনতাকে বিসর্জন দিতে রাজি ছিল না কাজেই শেখ তাদের দলের লােকদের শাসনের পরিবর্তিতে প্রশ্রয়ই দিতেন বেশি।একই গােত্রের লােকদের পরস্পর মধ্যে মিল-মহব্বত ছিল। কিন্তু ভিন্ন। গােত্রের লােকদের সাথে পরস্পর শত্রুতা ছিল।
দলের বা গােত্রের স্বার্থরক্ষার জন্য তারা জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিতে কুণ্ঠিত ছিল না। আরবের এ তমা যুগে কোনাে রাষ্ট্র পরিচালক না থাকায় আরববাসিগণ অকারণে ঐসব রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ব্যাপৃত থাকতাে। দীর্ঘকালব্যাপী এসব কলহ-বিবাদ আইয়াম আল আরব বা আরবের দিন নামে পরিচিত।
প্রাক ইসলামি যুগের ধর্মীয় বিশ্বাস
জাহেলিয়া যুগে আরবে মােটামােটিভাবে পাঁচ প্রকার ধর্মবলম্বী লােক বাস করতাে – ইহুদি, খ্রিস্টান, প্রকৃতি – পূজক, মূর্তি উপাসক আরববাসী এবং হানিফ সম্প্রদায়।
ইহুদিগণ অজ্ঞানতাবশত জেহােবাকে বিশ্ব জগতের স্রষ্টা ও নিয়ন্তা মনে করতাে। অপরপক্ষে, খ্রিস্টানরা এক খােদার পরিবর্তে ত্রিত্ববাদে বা তিন খােদায় বিশ্বাসী ছিল। তাদের মতে, বিবি মরিয়ম এর গর্ভজাত ঈসা (আ) ছিলেন আল্লাহর পুত্র।
ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্ম আরবের নৈতিক ও পার্থিব অবস্থার উপর কোনাে প্রকার মঙ্গলজনক প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। আরববাসী ছিল মূর্তি উপাসক এবং প্রকৃতি পূজারী।
ইসলামের ইতিহাস এসাইনমেন্ট সমাধান
তারা ইচ্ছানুযায়ী দেব-দেবী প্রস্তুত করে সেগুলাের পূজা করত। তারা চন্দ্র, সূর্য , গ্রহ, নক্ষত্র, প্রস্তরখন্ড এবং বৃক্ষরাজিকেও পূজা করতাে।
যাদু, টোটকা, তন্ত্রমন্ত্র ইত্যাদি কুসংস্কারেও তারা বিশ্বাসী ছিল। যে কাবাগৃহ হযরত ইব্রাহীম আ. একমাত্র নিরাকার আল্লাহর জন্য নির্মাণ করেছিলেন, সে গৃহে পৌত্তলিক আরববাসী ৩৬০টি দেব-দেবীর মূর্তি কাবাগৃহে স্থাপন করেছিল।
প্রতি বছর তারা ঐসব দেব-দেবীকে অর্ঘ্য দিতে আসত এবং দেবতার মনস্তুষ্টির জন্য নরবিল দিত এবং এ উপলক্ষ্যে সেখানে ওকাজ মেলা নামে একটি বিরাট মেলা অনুষ্ঠিত হতাে।
আরবের তথা সমগ্র বিশ্বের নৈরাশ্যজনক ধর্মীয় অবস্থা কোনাে এক ঐশ্বরিক ত্রাণকর্তার আবির্ভাবের পূর্বাভাস সূচনা করছিল। এখানে ঐতিহাসিক আমীর আলী যথার্থভাবে মন্তব্য করেন,এর পূর্বে বিশ্বের ইতিহাসে কখনও একজন মহান ত্রাণকর্তার আর্বিভাবের সময় ও প্রয়ােজন এত বেশি অনুভূত হয়নি।
প্রাক ইসলামি যুগের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড
আরববাসীরা নিরক্ষর ও মূখ হলেও তারা তাদের অসাধারণ স্মৃতিশক্তি, বাগ্মিতা এবং কবিতা চার্চায় মনন শক্তির পরিচয় দিয়েছিল। তাদের কবিতার বিষয়বস্তু ছিল নারী, প্রেম, বংশ গৌরব,কুলজি, বীরত্বপূর্ণ কাহিনী ও যুদ্ধ বিগ্রহের ঘটনাবলি।
কবিরা তাদের অশ্লীল কবিতার মাধ্যমে সমাজে সর্বপ্রকারের অনর্থও ঘটাত। প্রাক ইসলামি যুগের কবি ও পণ্ডিতদের মধ্যে ইমরুল কায়েস, তারাফা আমর, উম্মে কুলছুম, লােবিদ, যুহায়ের, হারিস, আনতারার নাম বিশেষভাবে উল্লেখ্য।
আরবের সাংস্কৃতিক জীবনে ওকাজ মেলার একটি বিশেষ গুরুত্ব ছিল। প্রত্যেক বছর এখানে সাহিত্য প্রতিযােগিতাও অনুষ্ঠিত হতাে। পুরস্কারপ্রাপ্ত কবিতা কাবা ঘরের দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা হতাে। এরূপ সাতটি ঝুলন্ত কবিতা (সবঅ মআল্লাকাত ) উমাইয়া আমলে সঙ্কলিত হয়। কবিতাগুলাে সমগ্র আরবি সাহিত্যের অসাধারণ সৃষ্টি।
প্রাক ইসলামি যুগের উৎকৃষ্ট গুণাবলি ও দৃষ্টিভঙ্গি
প্রাচীন আরবের অধিবাসীদের একটি চমৎকার বৈশিষ্ট্য ছিল এই যে, তারা ছিল স্বভাব কবি এবং তাদের মধ্যে অনেকেই ছিল শ্রুতিধর, কেবলমাত্র মুআল্লাকাত ব্যতীত তাদের রচিত অন্যান্য কাব্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এসাইনমেন্ট সমাধান
তৎকালীন আরব সমাজব্যবস্থায় কিছু ক্ষেত্রে নারীর স্বাধীনতা সীমিত আকারে হলেও স্বীকৃত ছিল। বিশেষ করে বেদুইন মহিলারা সমাজে পুরুষদের সমান অধিকার লাভ করতাে। তারা ব্যবসা-বাণিজ্য উপলক্ষে দেশ-দেশান্তরে গমন করতাে। বাইরের জগতের সাথে যােগাযােগের ফলে তাদের জীবন ছিল পরিবর্তনশীল।
এভাবে তারা নিজস্ব সভ্যতা গড়ে তুলেছিল। তাছাড়া আরববাসী কোনাে শক্তির কাছে মাথা নত করতে রাজি ছিল না। দেশের আবহাওয়া ও প্রকৃতির প্রভাবে আরবের প্রতিটি নাগরিক দেশের স্বাধীনতা অটুট রাখতে সচেতন ছিল।।
আরো দেখুনঃ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি চতুর্থ সপ্তাহের সমাধান
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ২য় পত্র এসাইনমেন্ট
এইচএসসি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ২য় এসাইনমেন্ট দ্বিতীয় পত্র বইয়ের প্রথম অধ্যায়: ভারতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা থেকে নেওয়া হয়েছে।
আরো দেখুনঃ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি চতুর্থ সপ্তাহের সমাধান
এসাইনমেন্টঃ
ভারতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার সময় পরিক্রমা অনুযায়ী উল্লেখযােগ্য ঘটনাবলির সংক্ষিপ্ত বিবরণসহ একটি পােস্টার পেপার তৈরি করাে।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সমাধান ২য় পত্র
ভারতে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠার সময় পরিক্রমা অনুযায়ী উল্লেখযােগ্য ঘটনাবলির সংক্ষিপ্ত বিবরণসহ একটি পােস্টার পেপার তৈরি করা হল:
ক) মুহাম্মদ বিন কাসিমের অভিযানের কারণ: তৎকালীন ভারতের সিন্ধু ও মুলতানের রাজা ছিলেন দাহির। আরব সাম্রাজ্যের পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ ইরাক প্রদেশের গভর্ণর ছিলেন হাজ্জাজ বিন ইউসুফ। সিন্ধু ও মুলতানের সাথে আরব শাসনের সাধারণ সীমান্ত ছিল। নানা কারণে হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ও রাজা দাহিরের মধ্যে মতপার্থক্য হয়। এ কারণে হাজ্জাজ ভারতের সিন্ধু জয় করার জন্য তার জামাতা ও ভাতুস্পুত্র মুহম্মদ বিন কাসিমের নেতৃত্বে ৭১২ খ্রিস্টাব্দে এক বিজয় অভিযান প্রেরণ করেন।
পরােক্ষ ও প্রত্যক্ষ কারণসমূহ: সিন্ধু বিজয়ের পরােক্ষ কারণসমূহের মধ্যে ছিল অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কারণ এবং প্রত্যক্ষ কারণের মধ্যে ছিল জলদস্যুদের দ্বারা আরব বণিকদের জাহাজ লুণ্ঠন।
অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কার: ভারত ধন-ঐশ্বর্যের জন্য বিখ্যাত ছিল। আরবদের সিন্ধু অভিযানের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল ভারতের ধনরত্ন লাভ করা। রাজা দাহিরের রাজ্য ও আরব সাম্রাজ্যের মধ্যে সীমান্ত অভিন্ন হওয়ায় দুই রাজ্যের মধ্যে প্রায়ই মতানৈক্য ও মতবিরােধ সৃষ্টি হতাে এবং সীমান্ত সংঘর্ষ লেগেই থাকত।
হাজ্জাজ ছিলেন কঠোর প্রকৃতির শাসক। আইনের শাসন এড়িয়ে হাজ্জাজের অঞ্চল থেকে অনেক অপরাধী রাজা দাহিরের রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছিল। এ সকল কারণে রাজনৈতিক তিক্ততা উত্তরােত্তর বাড়তে থাকে।
এই সময় সিন্ধুতে চলছিল রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা দাহির ছিলেন অত্যাচারী শাসক। নিম্নশ্রেণির লােকেরা ছিল অত্যাচারিত, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কোনাে রাজনৈতিক অধিকার ছিল না। সুতরাং এ সুযােগ কাজে লাগিয়ে হাজ্জাজ সিন্ধু জয় করে সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটাতে চেয়েছিলেন। ভারতে ইসলাম প্রচার করাও হাজ্জাজের একটি উদ্দেশ্য ছিল।
এইচএসসি ২০২১ ইসলামের ইতিহাস এসাইনমেন্ট সমাধান
খ) সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের উদ্দেশ্য ফলাফল: রাজনৈতিক কারণ, সুলতান মাহমুদের পিতা সবুক্তগীনের সময় থেকে গজনির সাথে পাঞ্জাবের হিন্দুশাহী বংশের বিরােধ চলছিল। পাঞ্জাবের হিন্দুশাহী রাজ্যের রাজা জয়পাল সবুক্তগীনের শত্রু হওয়ায় সুলতান মাহমুদ জয়পালের সাথে শত্রুতা উত্তরাধিকার সত্রেই পেয়েছিলেন। ভারতের অনেক রাজা জয়পালের সাথে মাহমুদ বিরােধী জোটে যােগদান করেন।
সুতরাং মাহমুদকে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করতে হয়। আবার ভারতের কোন কোন রাজা মাহমুদের সাথে বন্ধুত্ব সূত্রে আবদ্ধ হয়। এতে তাদের প্রতিবেশী রাজন্যবর্গ তাদের প্রতি বৈরী আচরণ শুরু করেন।
মিত্রবর্গের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্যও মাহমুদকে ভারতে অভিযান করতে হয়। পরাজিত রাজারা মাহমুদের সাথে সন্ধি করেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সুযােগ পেয়ে সন্ধির শর্ত ভঙ্গ করেন। বিদ্রোহী রাজাদের সন্ধির শর্ত পালনে বাধ্য করার জন্যও মাহমুদকে অভিযান করতে হয়।
অর্থনৈতিক কারণ: সুলতান মাহমুদ রাজধানী গজনিকে তিলােত্তমা নগরীতে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন জ্ঞানী-গুণীর পৃষ্ঠপােষক। তাঁর ছিল একটি অত্যন্ত শক্তিশালী সৈন্যবাহিনী। তিনি দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে তােলেন। এসবের জন্য তার প্রচুর অর্থের প্রয়ােজন ছিল। তখন ভারত ছিল সম্পদশালী দেশ। এখানকার বিভিন্ন রাজ্যের কোষাগার ধনরত্নে পূর্ণ ছিল।
ধর্মপ্রাণ বিত্তশালী ব্যক্তিবর্গ অকাতরে মন্দিরগুলােতে দান করতাে। মন্দিরকে নিরাপদ বিবেচনা করে অনেক সময় রাজারাও তাতে ধনরত্ন সংরক্ষণ করতেন। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই সুলতান মাহমুদের নজর ভারতের উপর পড়ে। এজন্য তিনি প্রায় প্রতি বছর ভারতে অভিযান প্রেরণ করেন এবং ভারত থেকে প্রচুর ধন-রত্ন নিয়ে নিজ দেশে ফিরে যান।
প্রফেসর হাবিব, প্রফেসর নাজিম ও হেইগ প্রমুখ আধুনিক ঐতিহাসিকগণ সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের কারণ হিসেবে অর্থনৈতিক কারণকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই বলে মাহমুদকে লুণ্ঠনকারী বা অর্থলােলুপ তস্কর বলা যাবে। কারণ ভারত থেকে সংগৃহীত অর্থ তিনি মানব কল্যাণে ব্যয় করেন। নিজের ভােগ-বিলাসের জয় তিনি সে অর্থ ব্যবহার করেন নি।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এসাইনমেন্ট সমাধান
সামরিক উদ্দেশ্য: সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণের পাশাপাশি সামরিক উদ্দেশ্য ছিল। তাঁর রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য উত্তর-পশ্চিম সীমান্তপ্রদেশ, পাঞ্জাব ও সিন্ধু দখল করা অত্যন্ত প্রয়ােজন ছিল। এ সকল অঞ্চল ছিল সামরিক দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দক্ষ সমরবিদ হিসেবে তার অশ্বারােহী ও পদাতিক বাহিনী ছিল সমরনিপুণ। তিনি বুঝতে পারেন এ সকল অঞ্চল জয় তিনজন ছিল সুশৃংঙ্খল ও করতে তাকে খুব একটা বাধার সম্মুখীন হতে হবে না সুতরাং তিনি বার বার ভারত আক্রমণ করে তার সামরিক উদ্দেশ্য হাসিল করেছিলেন।
ধর্মীয় উদ্দেশ্য: সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের পশ্চাতে কোন কোন ঐতিহাসিক ধর্মীয় উদ্দেশ্যও কার্যকর ছিল বলে মনে করেন। তাদের মতে তিনি ভারতে ইসলাম প্রচারে অভিলাষী ছিলেন। কিন্তু আধুনিক ঐতিহাসিকগণ এই মত সমর্থন করেন না। তারা মনে করেন মাহমুদের যুগে শাসকগণ ইসলাম প্রচার করা তেমন কর্তব্য বলে মনে করতেন না।
তিনি ভারত অভিযানে এসে কোন বিধর্মীকে বলপর্বক ইসলাম গ্রহণে বাধ্য করেন নি। এছাড়া মাহমুদ হিন্দুমন্দির দখল করেছেন ধর্ম বিদ্বেষের কারণে নয়, বরং অর্থ পাওয়ার আশায়। এ সকল মন্দির ছিল যুগ যুগ ধরে সঞ্চিত সম্পদে পূর্ণ। সর্বোপরি তার সেনাবাহিনীতে হিন্দু সৈন্যের উপস্থিতি তার ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যকে অনুমােদন করে না।
সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের ফলাফল: সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের প্রভাব সমগ্র উত্তর-পশ্চিম ভারতে অনুভূত হয়। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এই অভিযানের প্রভাব ছিল ব্যাপক। সুলতান মাহমুদ অভিযান করেছেন, জয়লাভ করেছেন এবং ধন-সম্পদ নিয়ে নিজের রাজ্য গজনিতে ফিরে গিয়েছেন।
শুধু পাঞ্জাবের কিয়দংশ এবং মুলতান ছাড়া ভারতের কোনাে অঞ্চল তার সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন নি এবং কোন স্থায়ী সাম্রাজ্যও প্রতিষ্ঠা করেন নি। কয়েকজন রাজা অবশ্য তাকে কর দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু ১০৩০ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যুর সাথে সাথে এই সকল রাজা কর প্রদান বন্ধ করেন।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি এসাইনমেন্ট সমাধান
তবে এ কথাও সত্য যে, সুলতান মাহমুদের বিজয় স্থায়ী না হলেও তার বিজয়ই পরবর্তীকালে মুসলমানদের ভারত বিজয়ের পথ সুগম করেছিল। সুলতান মাহমুদের বার বার আক্রমণ উত্তর ভারতের রাজন্যবর্গের সামরিক শক্তি দুর্বল করে দিয়েছিল।
সামরিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে একেবারেই দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন বলে পরবর্তী মুসলমান আক্রমণ প্রতিহত করা সম্ভবপর হয় নি। সুলতান মাহমুদের অভিযানের সময় ভারতীয় সামরিক শক্তি ও রণকৌশল মুসলমগধ সামরিক শক্তি ও রণকৌশলের তুলনায় যে কত দুর্বল তা প্রকটভাবে ধরা পড়ে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের ফলাফল ছিল লক্ষ্যনীয়। তিনি ভারতীয় পন্ডিতদের নিকট ভারতের দর্শন, সমাজ ব্যবস্থা ও কৃষি সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করেন।
এর ফল স্বরূপ তিনি তার বিখ্যাত গ্রন্থ কিতাব-উল-হিন্দ ‘প্রণয়ন করেন। গ্রন্থটি ভারত ইতিহাসের অমূল্য উপকরণ। মাহমুদের অভিযানের ফলে ইসলামি সভ্যতা ও ভারতীয় সভ্যতার মধ্যে ভাব বিনিময় ঘটে।
গ) মুইজউদ্দিন মুহাম্মদ ঘুরীর অভিযান পূর্ব ভারড়ে রাজনৈতিক অবস্থা: আফগানিস্তান, কাশ্মীর ও কনৌজ মৌর্য বংশের শাসনামল থেকেই আফগানিস্তান ছিল ভারতের একটি অংশ।
মুসলিম ঐতিহাসিকগণ এটিকে হিন্দুশাহী রাজ্য বলে অভিহিত করেন। সপ্তম শতাব্দিতে কর্কট রাজবংশীয় দুর্লভ বর্ধনের অধীনে কাশ্মীর ছিল উত্তর ভারতের অপর একটি স্বাধীন রাজ্য। তিনি কনৌজ, কামরূপ, কলিঙ্গ ও গুজরাট জয় করেন বলে জানা যায়।
কর্কট বংশের অপর একজন শাসক জয়পীড় গৌড় ও কনৌজের নৃপতিদের পরাজিত করেন। অষ্টম শতাব্দী প্রথম দিকে কনৌজ ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বাধিক গুরুত্বপুর্ণ রাজ্য হিসেবে পরিগণিত হত। তিনি গৌড় জয় এর রাজাকে হত্যা করেন এবং কাশ্মীর রাজ ললিতাদিত্যের সহায়তায় তিব্বত অভিযান করেন।
তিনি চীনে দূত প্রেরণ করেন। কাশ্মীরের রাজা ললিতাদিত্য কর্তৃক তিনি পরাজিত ও নিহত হন। যশােবর্মণ, সিন্ধুরাজ দাহিরের সমসাময়িক ছিলেন অত- পর অষ্টম শতকের প্রথম দিকে কনৌজে গুরজর-প্রতিহার রাজবংশের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইসলামের ইতিহাস এসাইনমেন্ট সমাধান HSC 2021
সিন্ধু ও মালব-দিল্লি ও আজমীর: সপ্তম শতকে সিন্ধু ছিল হর্ষবর্ধনের সাম্রাজ্যভুক্ত। পরবর্তীতে ‘চাচ’ নামক সিন্ধুর জনৈক ব্রাহ্মণ মন্ত্রী সিন্ধুতে স্বাধীন রাজবংশের গােড়াপত্তন করেন। চাচের পত্র রাজা দাহির কে পরাজিত করে ইমাদউদ্দীন সিন্ধুতে স্বাধীন রাজবংশের গােড়াপত্তন করেন।
চা পুত্র রাজা দাহির কে পরাজিত করে ইমাদউদ্দীন মুহাম্মদ বিন কাশিম ৭১২ সালে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। তবে এ রাজ্য দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। প্রতিহার রাজপুতদের দ্বারা শাসিত মালব ছিল উত্তর ভারতের একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র। উজ্জয়িনী ছিল এ রাজ্যের রাজধানী। দ্বাদশ শতকে মুসলিম অভিযানের প্রাক্কালে দিল্লি ও আজমীরে শক্তিশালী চৌহান বংশীয় রাজপত্রগণ রাজত্ব করত।
গুজরাট, আসাম ও নেপাল: মুসলিম বিজয়ের প্রাক্কালে গুজরাট ছিল গুরজর প্রতীহার বংশের অধীনে। অত-পর তাদের আধিপত্য ক্ষুন্ন করে চালক ও ভাগেলা বংশ পর্যায়ক্রমে শাসন করে। নবম শতাব্দীতে চান্দেলা বংশ বুন্দেলখন্ডে এক স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। শেষ রাজা গন্ড ১০১৯ খ্রিস্টাব্দে সুলতান মাহমুদের নিকট পরাজিত হন।
ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তসীমায় এক স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। শেষ রাজা গন্ড ১০১৯ খ্রিস্টাব্দে সুলতান মাহমুদের নিকট পরাজিত হন। ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর পূর্ব প্রান্তসীমায় অবস্থিত একটি রাজ্য হল আসাম।
এটি হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর সম্পূর্ণ স্বাধীন হয়। এ সময় রাজা শশাঙ্ক ছিলেন বাংলার স্বাধীন নৃপতি। হর্ষবর্ধনের সমস্যময়িক এই শাসকের মৃত্যুর পর বাংলায় মারাত্মক গােলযােগ ও বিশৃংঙ্খলা দেয়। নেপাল সপ্তম শতাব্দিতে অপর একটি স্বাধীন রাজ্য।
আরো দেখুনঃ ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি চতুর্থ সপ্তাহের সমাধান
২০২১ সালের এইচএসসির অন্যান্য বিষয়ের উত্তর দেখুন
বৃত্তি, শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, চাকরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহ সকল খবর সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
Join Our Official Facebook Group
HSC Islamic History 1st Paper PDF download, Hsc assignment 2021 islamic history 2nd paper answer, Assignment hsc 2021 1st week answer, Hsc islamic history and culture 2nd paper answer, HSC islamic history and culture 2nd paper assignment answer, Islamic history assignment ssc 2021, HSC Assignment 2021 1st week, HSC Islamic History 2nd Paper, Islamic history assignment hsc 2021 2nd week, Islamic history 2nd paper assignment hsc 2021, HSC Islamic History Book PDF, HSC assignment 2021 Islamic History answer, ইসলামের ইতিহাস অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ১ম পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর,
দ্বাদশ শ্রেণির এসাইনমেন্ট ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি,
২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার এসাইনমেন্ট ১ম সপ্তাহ ইসলামের ইতিহাস, Ssc ইসলামের ইতিহাস অ্যাসাইনমেন্ট, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ১ম পত্র প্রশ্ন ২০২১, আলিম ইসলামের ইতিহাস অ্যাসাইনমেন্ট, ইসলামের ইতিহাস ২য় অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর, ইসলামের ইতিহাস এসাইনমেন্ট, দ্বাদশ শ্রেণির এসাইনমেন্ট ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ২য় পত্র, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি 2য় পত্র প্রশ্ন উত্তর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি 2ম পত্র প্রশ্ন উত্তর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ১ম পত্র প্রশ্ন ২০২১, ইসলামের ইতিহাস অ্যাসাইনমেন্ট ২০২১, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ২ম পত্র প্রশ্ন উত্তর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ২য় পত্র প্রশ্ন ২০২১, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ১ম পত্র প্রশ্ন উত্তর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ১ম পত্র সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ২য় পত্র প্রশ্ন উত্তর এসাইনমেন্ট, দ্বাদশ শ্রেণির এসাইনমেন্ট ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি,