করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ বন্ধের কবলে পড়ে শিক্ষার্থীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এ অবস্থায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একটি রূপরেখা ঠিক করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গে ইউজিসির এক সভায় আলোচনার ভিত্তিতে এ বিষয় চূড়ান্ত হতে পারে। ইউজিসির সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
তার আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটি গতকাল বুধবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী ১ জুলাই থেকে অনলাইনে সব বর্ষের চূড়ান্ত (ফাইনাল) পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে।
ইউজিসির কোনো কোনো সদস্য মনে করছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও উৎসাহী হবে, যা কালকের সভায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা হলো, আগামী ২৩ মে স্কুল-কলেজ এবং ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে।
কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় ঘোষিত সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে কি না, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
এ রকম পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পরীক্ষাগুলো অনলাইনে নেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ দিতে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগমকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে একটি রূপরেখা বা নির্দেশনাও তৈরি হয়েছে।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, তারা অনলাইনে পরীক্ষা এর ক্ষেত্রে সৃজনশীল অ্যাসাইনমেন্ট, ক্লাস টেস্ট, এমসিকিউ বা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নে পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষা বা ভাইভার মাধ্যমে মূল্যায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে রূপরেখাটি তৈরি করা হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে ভাইভার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছে তারা। কমিটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার কথাও তুলেছে। যদিও এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ইন্টারনেট সুবিধা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, তাদের চিন্তা হলো শিক্ষার্থীরা যেখানে আছেন, সেখান থেকেই খাতায় উত্তর লিখে সেটির ছবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পাঠাবেন। এ ক্ষেত্রে তারা কিছু ব্যবস্থা রাখার কথাও বলেছে। আর কোনো কারণে যদি কোনো শিক্ষার্থী অনলাইনে পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারেন, তাহলে তাঁকে যেন পরবর্তী সময়ে পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হয়, সেই বিষয়টিও রয়েছে সুপারিশে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা ১১টায় ভার্চ্যুয়ালি (জুম অ্যাপ) এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে তৈরি করা সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হবে।
দেশে বর্তমানে ৪৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ থাকায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। সেশনজটে পড়ে শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনেও পিছিয়ে পড়ছেন। এর আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল ইউজিসি। যদিও সেটি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ক্লাস এবং পরীক্ষা চলমান রয়েছে।
বৃত্তি, শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, চাকরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহ সকল খবর সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েবসাইটি নিয়মিত ভিজিট করুন।
Join Our Official Facebook Group